তামিলনাড়ুতে ভয়াবহ বন্যা, ডুবেছে বিমানবন্দর
ভারতের তামিলনাড়ুতে তিন সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের ভয়াবহ বন্যায় রাজধানী চেন্নাইয়ের অধিকাংশ রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি ডুবে গেছে।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিস ও ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসকিউ ফোর্সের পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, বন্যার পানি চেন্নাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়েতে প্রবেশ করে বিমানের আন্ডার ক্যারেজ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ১০টা পর্যন্ত ৯টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। আটকে পড়েছেন প্রায় ৪০০ যাত্রী।বিমানবন্দরের পরিচালক দীপক শাস্ত্রি জানিয়েছেন, পানি না নামা পর্যন্ত বিমান উঠা-নামা বন্ধ থাকবে।
এদিকে রেল লাইনের উপর পানি ওঠায় ১৩টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। বন্যার পানি চিড়িয়াখানার ভেতরেও প্রবেশ করেছে। চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চার কিলোমিটার পথ হেঁটে সেখানে পৌঁছুতে হচ্ছে বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
নভেম্বর মাসে চেন্নাইয়ে মোট ১০৪৯ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে যা ১০০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অধিকাংশ রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যান চলাচলও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শহরের বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে চেন্নাইয়ের স্কুলগুলো বন্ধ রয়েছে, স্থগিত করা হয়েছে অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা। আটকেপড়া লোকজন বাস, প্রাইভেট কার ও বাড়ির ছাদ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সাহায্য চাইছেন।
বৃষ্টি এ সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।দুর্যোগকালীন সময়ে রাজ্য সরকারকে সব ধরনের সহায়তা দেবার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।ট্যুইটারে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, “জয়ললিতার সঙ্গে তামিলনাড়ুর একাংশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছি। এ দুঃখজনক সময়ে তাকে সব ধরনের সমর্থন ও সহযোগিতার নিশ্চয়তা দিচ্ছি।”
এনডিটিভি জানিয়েছে, বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত চেন্নাই শহরতলীর তামবারাম ও ওরাপাক্কামে সেনাবাহিনীর ৫০ সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌবাহিনীকে।ভয়াবহ এই মুহূর্তে একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছে চেন্নাইবাসী। শহরের বাসিন্দারা ‘অপরিচিত’ লোকদের জন্য বাড়ির দরজা খুলে দিচ্ছে। নিজেদের খাবার, আশ্রয় এমনকি মোবাইল রিচার্জও একে অপরের সঙ্গে ভাগাভাগি করছেন।
দক্ষিণ চেন্নাইয়ের এক শপিংমল কর্তৃপক্ষ বন্যায় আটকে পড়াদের সাহায্য করতে রাতেও দোকান খোলা রাখার ঘোষণা দিয়েছে।রাজ্যের শাসক দল এআইডিএমকে’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা ভয়াবহ এ পরিস্থিতির ‘মিনিট বাই মিনিট’ পর্যবেক্ষণ করছেন।
“প্রয়োজনীয় মুহূর্তে দুর্যোগ আক্রান্ত এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে পুলিশ, ফায়ার এন্ড রেসকিউ, ন্যাশনাল এন্ড স্টেট ডিজাস্টার ফোর্স ও কোস্ট গার্ডকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।”
বন্যাকবলিত এলাকায় ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসকিউ ফোর্সের ৪টি দল কাজ করছে, নতুন করে আরও ৬টি দলকে সেখানে পাঠানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে।