প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির চিঠি
আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের নিরাপত্তা এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন কমিশন সচিব সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিটি বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বরাবর পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘এবারই প্রথম মেয়র পদে রাজনৈতিক দলভিত্তিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচনে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড আগ্রহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। তাই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখা এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখা এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্দেশনা জারি করার জন্য আপনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
চিঠি পাঠানোর সত্যতা নিশ্চিত করে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপ-সচিব সামসুল আলম দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘পৌরসভা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ এবং প্রার্থীদের যাতে যথাযথ নিরাপত্তা প্রদান করা হয় তার ব্যবস্থা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
এর আগে, ২৮ নভেম্বর নির্বাচনের নিরপেক্ষতা, গ্রহণযোগ্যতা অক্ষুণ্ন ও সমুন্নত রাখতে রিটার্নিং অফিসারদের ছয়টি নির্দেশনা দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপ-সচিব সামসুল আলম স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, ‘বিশেষ কোনো মহলের কোনো প্রকার প্রভাব বা হস্তক্ষেপ নির্বাচনের নিরপেক্ষতা যাতে ক্ষুণ্ন করতে না পারে তা আইনি বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালার আলোকে নিশ্চিত করতে হবে।’
‘নির্বাচনের ন্যায় একটি সংবেদনশীল, স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ এমন কোনো কাজ করবেন না, যার দ্বারা তাদের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় জনগণের নিকট হেয়প্রতিপন্ন হতে হয় এবং তারা যে পক্ষপাতদুষ্ট নন এমন ধারণা সৃষ্টির নিশ্চয়তা বিধানকল্পে প্রতিটি কাজে আইন ও বিধির যথার্থ প্রয়োগ ও অনুসরণ করতে হবে।’
এ ছাড়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে এলাকার জনগণের যৌথসভার মাধ্যমে সকলকে ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করতে বলা হয়।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ‘ভোটদানের জন্য ভোটারগণ যাতে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন, সে উদ্দেশ্যে নিশ্চয়তামূলক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ভ্রাম্যমাণ ইউনিটসমূহকে নিবিড় টহলদানের ব্যবস্থা করতে হবে।’
‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ও ভোটকেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে এবং যেকোনো প্রকার অশুভ কার্যকলাপ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে সদা সতর্ক থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর নির্দেশ প্রদান করতে হবে। ভোটকেন্দ্রের অবস্থান সম্পর্কে ভোটারদের অবহিত করার জন্য নির্বাচনের পূর্বে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।’
সারাদেশে ২৩৫ পৌরসভায় ৩০ ডিসেম্বর একযোগে ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে এক হাজার ৫৭ জন মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে কেউ প্রত্যাহার না করলে নির্বাচনের মাঠে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে নয় হাজার ১৬১ এবং সংরক্ষিত আসনে দুই হাজার ৫১০ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ হয়েছে।