‘আদালতে তোলার আগে আসামিকে গণমাধ্যমে নয়’
আদালতে হাজিরের আগেই কোনো আসামিকে প্রচার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করা যাবে না। এ ধরনের কাজ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন বিরত থাকে, সে জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন হাইকোর্ট।
জেএমবি সদস্য মামনুর রশিদ ওরফে জাহিদের মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবনের রায় প্রদানের সময় বৃহস্পতিবারএমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে মামনুর ওরফে জাহিদের মামলায় তদন্তে উদাসীনতার কারণে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশ মহাপরিদর্শক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেও আশা প্রকাশ করেছেন।
এ ছাড়া এ ঘটনায় তখনকার গাজীপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বোমা বা গ্রেনেডসহ জাহিদকে হাজির করে সংবাদ সম্মেলন করা দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ অভিহিত করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
আদালত বৃহস্পতিবার গাজীপুরে বোমাসহ আটক জেএমবি সদস্য মামনুর রশিদ ওরফে জাহিদকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন হাইকোর্ট।
আদালতে আসামির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এস এম শাহজাহান ও তাজুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মনিরুজ্জামান কবীর।
২০০৯ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেএমবিরসদস্য মামনুর রশিদ ওরফে জাহিদকে টঙ্গীর হরতইল গ্রামের একটি ভাড়া বাসা থেকে পাঁচটি হ্যান্ড গ্রেনেড, ডেটোনেটর এবং বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ আটক করে পুলিশ। পরেগাজীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার আব্দুল বাতেনের কার্যালয়েগ্রেনেডসহ জাহিদকে সংবাদ সম্মেলনে হাজির করে। সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে টেবিলে থাকা গ্রেনেড মামনুর ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এ সময় গ্রেনেড বিস্ফোরণে সাংবাদিক, পুলিশসহ কয়েকজন আহত হয়।
এ ঘটনায় করা মামলায় ২০১৩ সালে ১৩ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ মামনুরকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট মামুনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দেন।