অন্য লড়াইয়েও নাফিসার কাছে মাশরাফির হার
নাফিসা কামাল। পরিকল্পনা মন্ত্রী ও সাবেক বিসিবি, আইসিসি প্রেসিডেন্ট আ হ ম মুস্তফা কামালের সুযোগ্য কন্যা। বিপিএলের দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কর্ণধার। গত দুই আসরে নাফিসা কামালের দলেই খেলেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। আগেরবার কুমিল্লাকে চ্যাম্পিয়নও করেন মাশরাফি। কিন্তু গত আসরে নাফিসার সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। বিকালে ম্যাচ। নাফিসোর সঙ্গে নাকি রাগারাগি করে সকালে হোটেল থেকে সোজা বাসায় চলে এসেছিলেন মাশরাফি! এ ঘটনায় তোলপাড় হয়ে যায় ক্রিকেট অঙ্গন।
মাশরাফি নিজ মুখে এ বিষয়ে কিছুই বলেননি। তবে দলে একাদশ ঠিক করা নিয়ে এবং অন্য আরো কিছু বিষয়ে নাকি খুব বেশি হস্তক্ষেপ করতেন নাফিসা। যেটা মানতে পারেননি ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মাশরাফি। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে নাকি উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়েছিল।
পরে দলের আসল মালিক অর্থাৎ নাফিসার বাবা, পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ মুস্তাফা কামাল পরিস্থিতি সামলান। মাশরাফি যোগ দেন দলের সঙ্গে। প্রচণ্ড মন খারাপ নিয়ে টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচগুলো কোনোরকম খেলে কুমিল্লাকে গুডবাই জানান মাশরাফি। ঝামেলার পর যতদিন দলের সঙ্গে ছিলেন, ততদিন নাফিসার কামালের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি ম্যাশ। সেই থেকে দুজনের সম্পর্কটা এখনও ‘কঠিন’ হয়ে আছে। কেউ কারো মুখ দেখতে চান না। কথা তো দূরের ব্যাপার।
নাফিসার দল ছেড়ে রংপুর রাইডার্সে চলে এসেছেন মাশরাফি। দুজন এক অপরকে সবসময় এড়িয়ে চললেও শনিবার মুখোমুখি হতেই হযেছে তাদের। গতবছরের ঝামেলার পর্ গতকালই নাফিসার দলের বিপক্ষে প্রথম মাঠে নামেন মাশরাফি।
ম্যাচের শুরু থেকেই তাই একটু বাড়তি সিরিয়াস ছিলেন রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক। ছিলেন খুবই আক্রমণাত্মক। কুমিল্লাকে ১৫৩ রানে আটকে রাখার আসল কাজটিই করেন মাশরাফি। চলতি বিপিএলে মাশরাফির সেরা বোলিং নাফিসা কামালের দলটির বিপক্ষেই করেছেন। ২২ রানে ২ উইকেট। দলের সেরা বোলার ছিলেন ম্যাশ।
দলে বাঘাবাঘ ব্যাটসম্যান। ১৫৪ রান করা কঠিন মনে করেননি মাশরাফি। কিন্তু তার ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ। তবে ব্যাট হাতে জবাব দেওয়ার সাধ্যমত টেষ্টা করেছেন তিনি। সেরা বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়ে সেরা স্ট্রাইট রেটও তার। ১১ বলে ১৭ রান করে হয়েছেন রান আউট।
অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করেও দলকে জেতাতে পারেননি মাশরাফি। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন অধিনায়ক। নাফিসা কামালের দলের কাছে হেরে বেশ মন খারাপ ছিল তার। তার শরীরী ভাষা সেটাই বলে দিচ্ছিলো। মাশরাফির মন খারাপ হওয়ারই কথা। কারণ মাঠের লড়াইয়ের বাইরেও আরেক লড়াই ছিল এ ম্যাচে। যে লড়াইয়ে নাফিসের কাছে হেরে গেছেন মাশরাফি। জিতেছেন নাফিসা কামাল। পরের ম্যাচে কী প্রতিশোধ নিতে পারবেন মাশরাফি?