মিয়ানমারে শুরু হচ্ছে আসেম সম্মেলন
মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডো তে আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে এশিয়া-ইউরোপ মিটিং বা আসেম সম্মেলন। দুই দিনের এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এশিয়ার শক্তিধর দুটো দেশ চীন ও ভারত এবং ইইউ এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশ নিচ্ছেন। খবর বিবিসির।
সম্মেলনে যাওয়ার আগে চীন, জাপান ও ইইউর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বাংলাদেশ সফরে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে গেছেন।
এই পরিস্থিতিতে আসেম সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের ব্যাপারে কতটা অগ্রগতি হতে পারে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক সৈয়দা রোজানা রশীদ বলছেন, সংকট সমাধানের জন্য এটা একটা শুরু হতে পারে। কারণ, এশিয়া এবং ইউরোপের দেশগুলো সবাই দেখে গেছে পরিস্থিতি, ফলে রোহিঙ্গা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। অর্থাৎ সম্মেলনে এই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা বিভিন্নভাবেই উঠবে বলে আশা করা যায়।
সৈয়দা রোজানা রশীদ বলছেন, এখানে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোকে ব্যবহার করার একটা সুযোগ পাবে, আর সেই সুযোগটা বাংলাদেশ নিতে পারে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে। এটা সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে একটা শুরু হতে পারে।
যদিও তিনি শঙ্কা প্রকাশ করছেন, এ সম্মেলনে সমাধানের সুযোগ কতটা তৈরি হবে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
এদিকে, চীন এবং মিয়ানমারের মধ্যে যে কৌশলগত সম্পর্ক এবং বন্ধুত্ব, এর মধ্য থেকেই বিষয়টিকে বের করে নিয়ে আসার একটি উপায় বাংলাদেশকে বের করতে হবে।
এখানে ইতিমধ্যেই রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ যে আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিক্রিয়া পেয়েছে, সেটি কাজে লাগাতে হবে। সেই সঙ্গে দুই পক্ষের জন্যই সুবিধাজনক কোন একটি অবস্থা করে নিয়ে আসতে হবে।
সৈয়দা রোজানা রশীদ বলছেন, ইউরোপীয় দেশগুলো সবসময়ই এক ধরনের দ্বন্দ্বের মধ্যে থাকে। একদিকে, তারা যেমন মানবাধিকারের ক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়ন, অর্থাৎ রোহিঙ্গা ইস্যুর মানবিক সংকটের দিকটি নিয়ে কথা বলছে তারা, আবার অন্যদিকে তারা মাইগ্রেশন ইস্যুটাকে সিকিউরেটাইজ করে ফেলেছে। এর সঙ্গে তাদের নিজেদের জটিল রাজনৈতিক বিষয়ও আছে।
দেখা যাবে, রোহিঙ্গাদের তৃতীয় কোন দেশে নেয়ার ব্যবস্থা হয়ত হবে না। ফলে সকলেই হয়ত বলবে, সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের প্রতিপালন করার কাজটি চালিয়ে যেতে হবে।
সেক্ষেত্রে হয়ত খরচ চালিয়ে যাবার জন্য সাহায্য দেবে তারা। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এটা সবারই ভাবনায় আছে যে, বাংলাদেশ পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হলে সবারই অসুবিধা।
আঞ্চলিক এবং ভূ-রাজনৈতিক কারণে সেই বিষয়টি মাথায় রাখবে সবাই। কিন্তু যেহেতু ইইউ মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় থাকে সবখানে, ফলে তারা সমাধানের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাবে।
আগস্টের ২৫ তারিখের পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে রেহাই পেতে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে।