মাশরাফিদের হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে খুলনা
স্কোরকার্ডে ৪৫ রান যোগ করতেই নেই চার উইকেট। সেখান থেকে দলকে টেনে ১৪৫ রান পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন নাহিদুল ইসলাম ও রবি বোপারা। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি! পঞ্চম উইকেটে ১০০ রানের জুটি গড়েও জেতাতে পারেননি দলকে। শেষ পর্যন্ত খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে ৯ রানে হেরে মাঠ ছেড়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার রংপুর রাইডার্স। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পঞ্চম আসরে এটা খুলনার টানা তৃতীয় জয়। এই জয়ের ফলে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলটি।
শুক্রবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৫৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন খুলনা টাইটান্সের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মাহমুদউল্লাহর ৫৯ রানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রানের সংগ্রহ পায় খুলনা। জবাবে ২০ ওভার ব্যাট করলেও ছয় উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রানের বেশি করতে পারেনি রংপুর।
১৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে ধাক্কা। ২০ রানে নেই রংপুরের দুই বিধ্বংসী ওপেনার ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও ক্রিস গেইল। দ্বিতীয় ওভারে দুই রান করা ম্যাককালামকে ফেরান বিপিএলের এবারের আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা আফিফ হোসেন ধ্রুব। পরের ওভারেই গেইলকে সাজঘরে পাঠান আবু জায়েদ রাহি। আউট হওয়ার আগে দুই চার ও এক ছয়ে ১৬ রান করেন গেইল। নয় রানের ব্যবধানে রান আউটের ফাঁদে পড়েন মোহাম্মদ মিথুন।
ফজলে মাহমুদকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন রবি বোপারা। কিন্তু ফজলে মাহমুদকে বোল্ড করে সে চেষ্টাও সফল হতে দেননি ধ্রুব। ৪৫ রানে নেই রংপুরের চার উইকেট! নাহিদুল ইসলাম ও রবি বোপারার ব্যাটে শুরুর এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছিল দলটি। পঞ্চম উইকেটে দু’জন মিলে গড়েন ১০০ রানের জুটি। এই জুটি গড়ার পথে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান দু’জনই।
তাদের ব্যাটে চড়ে ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় শেষ ওভারে। জয়ের জন্য রংপুরের দরকার ছিল ১৫ রান। কিন্তু দ্বিতীয় বলে রান আউটের ফাঁদে পড়েন ৪৩ বলে সাত চারে ৫৮ রান করা নাহিদুল। শেষ চার বলে রংপুরের দরকার ছিল ১৪ রান। কিন্তু চার রানের বেশি করতে পারেননি রবি বোপারা ও থিসারা পেরেরা। জুনায়েদ খানের করা শেষ বলে আফিফ হোসেন ধ্রুবর তালুবন্দী হন বোপারা। ৪৪ বলে চারটি চার ও এক ছয়ে ৫৯ রান করেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় খুলনা টাইটান্স। স্কোরকার্ডে ১৪ রান যোগ করতেই ফিরে যান ওপেনার রিলে রুশো। ১০ রানের ব্যবধানে ফিরে যান আফিফ হোসেন ধ্রুব। দলীয় ৪৯ রানেই সাজঘরে ফেরেন আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। আউট হওয়ার আগে ২০ বলে তিন চারে বাঁহাতি এই ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে ২০ রান।
চতুর্থ উইকেটে নিকোলাস পুরানকে সঙ্গে নিয়ে ৪৩ রানের জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ১৩তম ওভারে পুরানকে সাজঘরে পাঠিয়ে জুটি ভাঙেন লাসিথ মালিঙ্গা। খুলনার স্কোর দাঁড়ায় চার উইকেটে ৯২ রান। এরপর লড়াইটা নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন মাহমুদউল্লাহ। ৩৬ বলে ছয় চার ও দুই ছয়ে ৫৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন ডানহাতি এই অলরাউন্ডার। তার এই ইনিংসের ভর দিয়েই স্কোরকার্ডে ১৫৮ রান যোগ করে খুলনা।
দলের স্কোর বড় করার চেষ্টা করলেও সফল হননি কার্লোস ব্রাথওয়েট-আরিফুল হক। ব্রাথওয়েট ১১ ও আরিফুল আউট হন ১৬ রানে। রংপুর রাইডার্সের পক্ষে রুবেল হোসেন তিনটি ও লাসিথ মালিঙ্গা নেন দু’টি উইকেট। একটি করে উইকেট নেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, সোহাগ গাজী ও থিসারা পেরেরা।