রোহিঙ্গাদের দুঃখ দুর্দশা জানবেন পোপ ফ্রান্সিস
খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফরে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দুঃখ দুর্দশা তার কাছে তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে খ্রিষ্টানদের ধর্মগুরু। তিনি জানিয়েছেন, এই সফরে পোপকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না বলে রোহিঙ্গাদের একটি দলকে তার কাছে আনা হবে।
পোপের প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে সফর নিয়ে সোমবার রাজধানীর কাকরাইলে আর্চবিশপ হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বাংলাদেশের প্রথম কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিও।
রোজারিও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের কথা যাতে পোপের কাছে পৌঁছায় সে জন্য চেষ্টা করছে আর্চবিশপ হাউস। পোপ শান্তির বার্তা নিয়ে বাংলাদেশে আসবেন। দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত, শরণার্থীদের পক্ষে কথা বলবেন।’
‘পোপের সফর অনেক আগে থেকেই নির্ধারিত। সে সময় পোপের সফরসূচি ছিল একদিনের। এমনকি তখন রোহিঙ্গা ইস্যুটি আলোচনায় ছিল না।’
‘আমাদের ইচ্ছা ছিল মহামান্য পোপকে রোহিঙ্গা শরর্ণার্থীস্থলে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সময় কম থাকায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমরা সরকারের সযোগিতায় রোহিঙ্গাদের একটি ছোট প্রতিনিধি দলকে ঢাকায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে কথা বলবেন পোপ।’
রোজারিও বলেন, ‘বিশ্বের অনেক বৃহৎ দেশের মানুষরা নির্যাতিত হচ্ছে। কিন্তু মহামান্য পোপ সেখানে না যেয়ে এই ছোট্ট বাংলাদেশের সফরে আসছেন। তিনি এই দেশের মানুষদের ভালোবেসেছেন। তিনি সম্প্রীতি ও শান্তি নিয়েই বাংলাদেশের সফরে আসছেন।’
ভ্যাটিকান সবসময় ন্যায় ও শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়ে থাকে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় পোপ ষষ্ঠ পল বাংলাদেশের স্বাধীনতার কয়েক মাসের মধ্যেই দুই জন প্রতিনিধি পাঠিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতিও দিয়েছিলেন।
রোজারিও বলেন, ‘পোপ ফ্রান্সিসের সফর দুই দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এটা তার রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে রাষ্ট্রীয় সফর এবং ক্যাথলিক চার্চের প্রধান ধর্মগুরু ও সর্বপ্রধান ধর্মপাল হিসেবে ধর্মীয় সফর।’
পোপ ফ্রান্সিস আগামী ৩০ নভেম্বর বিকাল তিনটায় বাংলাদেশে পৌঁছবেন। বাংলাদেশে এসেই তিনি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের শহীদদের এবং ধানমন্ডিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবেন।
এছাড়া রাষ্ট্রপতিসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন পোপ। আগামী ১ ও ২ ডিসেম্বর আর্চ বিশপ হাউস, তেজগাঁও কবরস্থান, পুরাতন গির্জা, তেজগাঁও মাদার তেরেসা ভবন পরিদর্শন এবং সোহওরার্দী উদ্যানে খ্রিষ্টধর্মীয় উপসনা ও যাজক অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন পোপ। ২ ডিসেম্বর বিকালে তিনি রোমের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন।
আর্চ বিশপ মোজেস এম কস্তা, বিশপ সেবাস্টিয়ান টুডু, বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস, গমেজ, বিশপ সুব্রত হাওলদার, বিশপ রমেন বৈরাগী প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।