মাদক ব্যবসায়ীকে সভাপতি করার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বর্জন
মো: মঞ্জুরুল আহসান, নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি:
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বাঘবেড় উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে মাদক ব্যবসায়ীকে সভাপতি করার প্রতিবাদে রোববার ও সোমবার অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় দুইদিনই পরীক্ষা বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ব্যবস্থাপনা কমিটি থেকে সভাপতিকে না সরানো পর্যন্ত বিদ্যালয়ে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবক বৃন্দ।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ,কয়েকজন অভিভাবক ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে,বাঘবেড় উচ্চবিদ্যালয় ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪০০ জন। গত ৭ জুন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য ওই দিন ১০ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এতে বাঘবেড় ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবুল হাশেমকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এলাকায় আবুল হাশেম মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত।
এ নিয়ে গত ২৫ জুন সোমবার থেকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ প্রতিবাদ সভা, বিক্ষোভ, মানববন্ধন সহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছেন। গত রোববার বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়। প্রথম দিন ছিলো গণিত পরীক্ষা। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করেন। ওইদিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদেও সাথে কথা বলে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের সোমবার থেকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ করতে বলেন। কিন্ত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিকে না সরানো পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কোন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করবে না বলে অভিভাবকরা জানান।
নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে,যাকে বিদ্যালয়ের সভাপতি করা হয়েছে তিনি এলাকায় চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ি। তাকে সভাপতি পদ থেকে না সরানো পর্যন্ত আমরা স্কুলে যামু না। এর প্রতিবাদে আমরা সবাই পরীক্ষা বর্জন করেছি।
অভিভাবক আবদুস সালাম বলেন, যতক্ষন পর্যন্ত এই মাদক ব্যবসায়ীকে বিদ্যালয় থেকে না সরানো হবে,ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের ছেলে মেয়েরা এই বিদ্যালয়ে যাবে না। এই মাদক ব্যবসায়ীকে সরাতে প্রয়োজনে আগামী দিনে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.সুরুজ্জামান বলেন, ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিকে কেন্দ্র করে অভিভাবকদের আন্দোলন চলছে। তার প্রেক্ষিতে গত রোববার প্রথম দিনে অংক পরীক্ষায় ৫০ জনের মত শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলো। পরে ইউএনও স্যারের নির্দেশে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আজ (সোমবার) কোন ছাত্র ছাত্রী বিদ্যালয়ে আসেনি। তাই দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর কবির বলেন, নবগঠিত কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।