শ্রীবরদীতে কৃষকদের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিল কৃষকলীগ
স্টাফ রিপোর্টার:
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার ন্যায় শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। ফলে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ঘরে থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে কৃষক-দিনমজুর ও বিভিন্ন শ্রমজীবি মানুষ। অপরদিকে কৃষকের রোপনকৃত বোরো ধান ইতিমধ্যেই পাকতে শুরু করেছে। আবার কোন কোন জায়গায় অগ্রিম বপণ করায় বোরো ধান পেকে গেছে শত শত একর। লকডাউনের কারনে একদিকে যেমন শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে কালবৈশাখীর ছোবলের কারণে উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলে আনার দুশ্চিন্তায় কপালে হাত পড়েছে অনেক কৃষকের।
এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ কৃষকলীগের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জায়গায় কৃষকের ক্ষেতের ধান কেটে ঘরে তুলে দিতে মাঠে নেমেছে কৃষকলীগের অসংখ্যা নেতা-কর্মীরা। তারই ধারাবাহিকতায় শেরপুর জেলা কৃষকলীগের সভাপতি আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে শ্রীবরদীতে কৃষকলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীরা দুই অসহায় কৃষকের এক একর জমির বোরো ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন নেতাকর্মী উপজেলার গড়জরিপা ইউনিয়নের শৈলবন্দ এলাকার আক্তারুজ্জামান ও সোহেলু নামে দুই কৃষকের উৎপাদিত ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দেন এসব কৃষকলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীরা।
জেলা কৃষকলীগের সভাপতি আব্দুল কাদের বলেন, বুধবার রাতে জানতে পারি উপজেলার গড়জরিপা ইউনিয়নের শৈলবন্দ এলাকার অসহায় কৃষক আক্তারুজ্জামান ও সোহেলুর উৎপাদিত বোরো ধান পাকার পরও শ্রমিকের অভাবে ধান কেটে বাড়িতে আনতে পারছে না। পরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কৃষকলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে ওই দুই কৃষকের ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিই। তিনি আরো বলেন, কৃষক আক্তারুজ্জামান ও সোহেলুর মতো অন্য কোন কৃষক যদি শ্রমিকের অভাবে ক্ষেতের ধান কাটতে সমস্যায় পড়ে, তাহলে আমরা অবশ্যই ওই সকল কৃষকের জমির ধান কেটে তাদের বাড়ি পৌঁছে দিব। কৃষকদের সহযোগিতায় আমাদের এ ধানকাটা কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে।
এসময় ধান কাটা ও পৌঁছানোর কাজে সহযোগিতা করেন, জেলা কৃষলীগের সহ-সভাপতি জয়নাল হাজারী, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান লেবু, গড়জরিপা ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান, শ্রমিকলীগের আহবায়ক জহুরুল ইসলাম সহ ইউনিয়ন কৃষকলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীরা।
এদিকে কৃষকলীগের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় জমির পাকা ধান ঘরে তুলতে পেরে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন কৃষক আক্তারুজ্জামান। এসময় তিনি বলেন, আমি ক্ষেতের পাকা ধান কেটে ঘরে উঠানো নিয়ে খুব দু:চিন্তায় ছিলাম। করোনার প্রাদুর্ভাবে ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। জেলা কৃষকলীগের সভাপতি আব্দুল কাদের ভাইয়ের নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা ধান কেটে দিয়েছে। দূর্যোগকালীন সময়ে এমন সহায়তার হাত বাড়ানোর জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, ভলোবাসা ও দোয়া করেন অসহায় আক্তারুজ্জামান ও সোহেলু।