শ্রীবরদীতে শ্রমিকলীগ নেতা বানু হত্যা অহনও ডর দেহায় ঘুমাতে পাইনা
স্টাফ রিপোর্টারঃ
“মেয়েডারে মেলা নির্যাতন করছে। স্বামীরে মারছে। অহন আমাগোরে মারতে চায়। অহনও ডর দেহায়, ঘুমাতে পাইনা। কই যাইমু? কথাগুলো বলছেন শেরপুরের শ্রীবরদীতে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত শ্রমিকলীগ নেতা আব্দুর রহিম বানুর স্ত্রী রোকেয়া বেগম। তিনি বলেন, মাইয়া রোকসানা বেগমকে জোড় করে বিয়ে করে প্রতিবেশী ফিরোজ। মেলা ট্যাহা যৌতুক দিছিলাম। এর পরেও নির্যাতন কইরা তাড়াইড়াইয়া দিছে। সেই থাইক্যা আমগোরে মারার চেষ্টা করতাছে। ওইদিন রাতে আমি ঘর থাইক্যা বাইর অইছি, অমনি দাউ, লাঠি লইয়া ঘরে ঢুইকা স্বামীরে কুপাইয়া মারছে। আমার চিৎকার শুইনা বাড়ির লোক আওনের আগেই সন্ত্রাসীরা চইলা গেল।” শনিবার এ ব্যাপারে সরেজমিন গেলে এসব কথা তুলে ধরেন তিনি।
জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের বিলভরট গ্রামের শ্রমিকলীগের সাবেক ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুর রহিম বানুর মেয়ে রোকসানাকে জোড় করে বিয়ে করে প্রতিবেশী নবাব আলীর ছেলে ফিরোজ মিয়া। পরে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। এ নিয়ে দ্বন্দ্বে কিছু দিন আগে ফিরোজ তাদের বাড়িতে হামলা করে। এ সময় বাড়ির লোকজন আত্মরক্ষার জন্যে ঘরে প্রবেশ দরজা বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় গ্রাম্য শালিস হয়েছে। এই দ্ব›েদ্বর জের ধরে গত ২০ অক্টোবর রাতে ফিরোজ ও সুরুজ আলীর ছেলে সুজনসহ ৭ হতে ৮ জন ধারালো অস্ত্র নিয়ে বানুর ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় তার মাথায় কুপিয়ে গুরতর আহত করে। পরে বাড়ির লোকজন তাকে আশংকাজনক অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওইদিন বিকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় বানু। তিনি মৃত্যুর সময় পরিবারের লোকজনের কাছে হত্যাকারীদের নাম বলে যান। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবারের কাছে একটি অডিও রয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে রমজান আলী বাদী হয়ে ফিরোজসহ ৮ জনের নামে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করলেও প্রধান আসামীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
রমজান আলী বলেন, বাবারে ঘরে ঢুকে ঘুমের মধ্যে কুপিয়ে হত্যা করলো। অহনও মামলার প্রধান আসামী ফিরোজ মিয়া ও সুজন মিয়াসহ অন্য আসামীরা গ্রেফতার হয়নি। বরং আসামীরা লোক দিয়ে ব্যবসা বানিজ্য ও কৃষি কাজ নিয়মিত করছে। উল্টো হুমকি দেয়। রাত কাটে আতংকে। আসামীদের গ্রেফতারে থানা ও পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্বারক লিপি দিয়েছি। আমরা ন্যায় বিচার চাই। স্থানীয় ইউপি সদস্য স্বপন মিয়া বলেন, সন্ত্রাসী ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামীলীগসহ অংগসংঠনের নেতৃবৃ›দ্ব মানববন্ধন করেছে। এখানে সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি করা হয়েছে।