শ্রীবরদীতে ড্রেসারের চিকিৎসায় হতদরিদ্র নারীর ছাগল মৃত্যু’র অভিযোগ

শ্রীবরদীতে ড্রেসারের চিকিৎসায় হতদরিদ্র নারীর ছাগল মৃত্যু’র অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার:
শেরপুরের শ্রীবরদীতে ড্রেসারের চিকিৎসায় এক হতদরিদ্র নারীর ছাগলের মৃত্যু’র অভিযোগ উঠেছে। ২০ ফেব্রুয়ারি রোববার বিকালে ওই ছাগলটি মারা যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বন্ধ ধাতুয়া গ্রামের মোঃ মজিবর রহমানের স্ত্রী মোছাঃ রোকেয়া বেগম (৫৫) উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে গিয়ে অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে , প্রায় এক যুগ যাবত একই কর্মস্থলে কাজ করছেন ড্রেসার মোঃ মোরাদুজ্জামান। একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন কাজ করার কারণে তিনি বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। সেই সাথে বিভিন্ন সেবা প্রার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। ভুক্তভোগী মোছাঃ রোকেয়া বেগম বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে আমি আমার একটি খয়ারী রংয়ের পাঁচ মাসের গর্ভবতী রাম ছাগল নিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে চিকিৎসার জন্য যাই। এসময় ড্রেসার মোঃ মোরাদুজ্জামান নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দেয়। সে আমার ছাগলটি দেখে একটি ব্যবস্থাপত্র লেখে দিয়ে ঔষধ কিনে আনতে বলে। আমি ঔষধ কিনে নিয়ে আসলে সে আমার ছাগলটিকে ইঞ্জেকশন ও কিছু বড়ি খাওয়ায়। আমি ইঞ্জেকশন দিতে বাধা দিলে, সে আমাকে ধমক দিয়ে বলে তুমি ডাক্তার নাকি আমি ডাক্তার, তুমি চুপ থাকো। ইঞ্জেকশন ও বড়ি খাওয়ার সাথে সাথেই আমার ছাগলটির পেট ফুলে যায়। আমি পেট ফুলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে উঠে এবং ছাগল নিয়ে চলে যেতে বলে। পরে বিকালেই আমার ছাগলটি মারা যায়। কান্না জরিত কণ্ঠে রোকেয়া বলেন, আমি গরিবী মানুষ, অন্যের বাড়িতে থাকি, কষ্ট করে একটি ছাগল লালন পালন করেছিলাম। ভুল চিকিৎসার কারণে আমার সব কিছুই শেষ। আমি এর বিচার চাই।
এ ঘটনায় উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের ড্রেসার মোঃ মোরাদুজ্জামান বলেন, আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে চিকিৎসা করি। তবে অভিযোগ উঠলে চিকিৎসা বন্ধ করে দিবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা: মোঃ উমর ফারুক বলেন, শ্রীবরদীতে বর্তমানে ভেটেরিনারি সার্জনের পদ শূন্য রয়েছে। তাছাড়া অন্যান্য পদে ১১ জন লোক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে মাত্র ৫ জন জনবল কর্মরত রয়েছেন। আমাকে প্রায়ই উপজেলার বিভিন্ন মিটিং ও প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। একমাত্র ভেটেরিনারি সার্জনের পদ শূন্য থাকার ফলে বাধ্য হয়েই কখনো কখনো  চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমে ড্রেসার বা অন্যান্যদের দ্বারা পরিচালনা করতে হয়। তবে তাদের ভেটেরিনারি সার্জনের  সাথে কাজ করার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং ভেটেরিনারি সার্জন বা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সাথে পরামর্শক্রমেই চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন।
শেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা: মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জনবল সংকট থাকায় ড্রেসাররা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। এতে এলাকার লোকজন সেবা পাচ্ছেন। ড্রেসার চিকিৎসা দিতে পারেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পল্লী চিকিৎসক যদি তিন মাস প্রশিক্ষণ নিয়ে চিকিৎসা দিতে পারেন, তবে ড্রেসার ত অনেক অভিজ্ঞ, সে দিতে পারবে না কেন? এ কথা বলে তিনি ফোন কেটে দেন।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend