রাষ্ট্রীয় সম্পদের মূল্য বুঝে, যত্ন নিতে হবে দায়িত্ব নিয়ে!- প্রকৌশলী এম মোকাদ্দেছ বিল্লাহ কাওছার
বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। জীবন জীবিকার তাগিদে দেশের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ রাজধানী ঢাকায় ( ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ) বসবাস করতে হয়। আমাদের দেশে চলাচলের যতগুলো যানবাহন আছে তার মধ্যে ট্রেন একটি নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী যান। পৃথিবীর অনেক দেশেই রেল যোগাযোগ আছে। উন্নত দেশের রেলগাড়ীর গতি অনেক বেশি। অধিকাংশ দেশে যাত্রী পরিবহনের জন্য রেলপথ নির্মিত হলেও আমাদের দেশে একটু ব্যাতিক্রম। বৃটিশ আমলে তাদের শাসনাধীন উপমহাদেশ (বাংলা) থেকে পন্য বা মালামাল সহজে পরিবহনের জন্য এই দেশে রেললাইন নির্মাণ করেছিলেন। সেজন্য তাদের নির্মানাধীন রেললাইন সিংগেল লাইন। বৃটিশরা এদেশ থেকে চলে যাওয়ার পর থেকে আস্তে আস্তে রেলপথে যাত্রী পরিবহনের জন্য মালগাড়ীর পরিবর্তে ট্রেন গাড়ি বাড়তে থাকে। আমাদের মতো জনবহুল দেশের জন্য রেল খাতের ভুমিকা অনেক বড় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে অবজ্ঞা অবহেলার কারণে বাংলাদেশের রেললাইন কাংখিত ভাবে বিস্তৃত হয়নি। এখনও অনেক জেলায় রেললাইন নেই এবং যেসব জেলায় আছে তাও পর্যাপ্ত নয়।
নিকট অতীতে কয়েকটি রুটে ডাবল লাইন নির্মান করা হয়েছে। এতে ট্রেনের গড় গতি কিছুটা বেড়েছে। ট্রেনের গড় গতি বাড়াতে হলে আরও ডাবল লাইন নির্মা করতে হবে। সব জেলায় রেললাইন নির্মাণ করতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের উত্তর অঞ্চলের জেলা গুলির জন্য ঢাকা – চিলাহাটি ( ৪৪৩ কিলোমিটার) রুটে বিদেশ থেকে আমদানি কৃত একটি নতুন ট্রেন ( চিলাহাটি এক্সপ্রেস) দেওয়া হয়েছে। ট্রেনটির ভিতরের সুযোগ সুবিধা খুবই যাত্রী বান্ধব। সিটের ধরন, সিটের হাতল, বসার সিস্টেম, সিলিং ফ্যান, ওয়াশ রুমের সুবিধা, দরজা জানালা বেশ উন্নত মানের। ট্রেন একটি পাবলিক পরিবহন হওয়ায় এগুলো রক্ষনাবেক্ষন বেশ কঠিন। অধিকাংশ ট্রেনের সিট, হাতল, দরজা, জানালা ইত্যাদি নির্ধারিত সময়ের আগেই ( লাইফ টাইম) নষ্ট হয়ে যায়। এর কারণ আমাদের সকলের জানা ব্যবহারকারীদের অবহেলা এবং রেল বিভাগের অবহেলা। একটি ট্রেন স্টেশনে স্টপেজ দেওয়ার পর পয়েন্টস ম্যান, গেট কিপার, আনসার, আর এন বি, জি আর পি, টিসি থেকে শুরু করে সবাই যেভাবে টিকেট চেক করার জন্য হুমরি খেয়ে পরে এসব সম্পদ রক্ষার্থে অর্ধেক হুমরি খেতেও দেখি না। এসব রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার এবং যত্ন করা সকল নাগরিকের দায়িত্ব। যখনই কোন ট্রেনে নির্ধারিত যাত্রী সংখ্যা থেকে ২/৩ গুন বেশি পরিমাণ যাত্রী পরিবহন করে তখনই এসব রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি বেশি হয়। এসব সম্পদ রক্ষার্থে সচেতনতা মূলক কিছু লেখালেখি ও লিফলেট কিছু কিছু ট্রেনে লেখা থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এসব সম্পদ যেহেতু সরাসরি ট্রেন যাত্রীরা ব্যবহার করেন সেহেতু এই ব্যপারে যাত্রীদের সচেতনতা বাড়াতে রেল বিভাগের কোন উদ্যোগ দেখিনা। সপ্তাহে ৩/৪ দিন কমলাপুর, বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগীয় স্টেশন গুলিতে রেল বিভাগের কয়েকটি টীম যদি যাত্রীদের সচেতনতা বাড়াতে ট্রেনের ভিতরে সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করার সিস্টেম প্র্যাক্টিক্যালি দেখাতেন এবং সচেতন করতেন তাহলে এই রাষ্ট্রীয় সম্পদের লাইফটাইম অনেক বেড়ে যেত।
এতে করে দেশের সম্পদের অপচয় কিছুটা রোধ হতো।
প্রকৌশলী এম মোকাদ্দেছ বিল্লাহ ( কাওছার)প্রকৌশলী এম মোকাদ্দেছ বিল্লাহ ( কাওছার)
মেম্বার, আই ই বি ৪০৫৫৭.