শেরপুরে গোড়া পচা রোগে নষ্ট হচ্ছে ব্রি-২৯ ধানের চারা, কৃষক দিশেহারা
শেরপুরের বিভিন্ন এলাকার বিপুল জমিতে ব্রি-২৯ বোরো ধান রোপণের পর সদ্য সবুজ হওয়া চারায় গোড়া পচা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এতে ধানের সবুজ পাতা ক্রমে হলদে হয়ে মরে যাচ্ছে। সার-কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো সুফল না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক ও কৃষাণিরা।
ভালো ফলনের স্বপ্ন নিয়ে শেরপুরের যেসব জমিতে ব্রি-২৯ ধানের আবাদ হয়েছে, সেসব জমি থেকে শেষ পর্যন্ত আধো কোনো ধান গোলায় তুলতে পারবেন কিনা, সে চিন্তায় কৃষকের কপালে ভাঁজ পড়েছে।
ধানের চারার গোড়া পচে যাওয়ার কারণ হিসেবে কৃষি বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তাদের অবহেলা, সময়মতো পরামর্শ না দেওয়াকে দায়ী করছেন বেশ কয়েকজন কৃষক।
ক্ষতিগ্রস্তদের কেউ কেউ বলছেন, সরকার অনুমোদিত ব্রি-২৯ ধানের বীজ বাজারে সরবরাহ করেছে ইস্পাহানিসহ বিভিন্ন কোম্পানি। নিম্নমানের সেই বীজ ডিলারদের কাছ থেকে কিনে উৎপাদিত চারা রোপণ করাতেও এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
বীজবাহিত ও আবহাওয়াজনিত কারণ ছাড়াও একাধিক কারণে এমনটি হতে পারে জানিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক বলছেন, এ জন্য তারা কৃষকদের ব্রি-২৯ জাতের ধান চাষ না করার পরামর্শ দিচ্ছেন। পরিবর্তে ব্রি-৮৯ এবং ব্রি-২৮ এর পরিবর্তে ব্রি-৮৮ জাতের ধান চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। চারা উৎপাদনের আগে যথাযথভাবে বীজ শোধন করে নেওয়ার পরামর্শও কৃষকদের দিচ্ছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবার জেলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৮৯ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি-২৯ আবাদ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে।
উপজেলা ও মাঠ পর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কাজ করছেন বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও কৃষকদের অভিযোগ, কৃষি বিভাগসহ কেউ তাদের পাশে নেই।
শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় এ বছর ৯১ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৮৯ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৯৭ ভাগ।
অতিরিক্ত উপপরিচালকের ভাষ্য, এ সময়ে দিনের তাপমাত্রা বেশি, রাতের তাপমাত্রা কম থাকছে। রাতে ও সকালে কুয়াশা পড়ার কারণে কিছু কিছু ধান গাছে ছত্রাকজাতীয় রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। আমাদের মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন।
তিনি বর্তমান আবহাওয়ায় সরকার অনুমোদিত কীটনাশক কার্বেনডাজিম গ্রুপের নাইম, ভেজিস্টিন ও ডাইথেন এম-৪৫ প্রয়োগে কৃষকদের পরামর্শ দেন।